Header Ads

"একগুচ্ছ লাল গোলাপ ও মিষ্টির গল্প"

স্যার একটা ফুল নেন ,স্যার একটা গোলাপ নেন  কেউ নেয় ,কেউ নেয় না।উসকু খুশকু চুল,ছেরা একটা জামা আর লাল একটা হাফ প্যান্ট পরা মেয়ে কাজল।বয়স ৫-৬ এর মতোন।মা মানুষের বাসায় কাজ করে আর কাজল ফুল বিক্রি করে বিভীন্নো গারিতে ।লাল গোলাপ ফুল।গোলাপ ফুলের মতোই কোমল কাজলের চেহারা আর সেই চেহারা টা গোলাপ ফুলের কাটায় রক্তাক্ত করে রেখেছে। 
                                                                                                                                                               প্রতিদিন মালিবাগ ওভার ব্রিজের নিচে ফুল বিক্রি করে ।কাজল প্রতিদিন যেখানে দারিয়ে থাকে তার পাশেই রস নামক মিস্টির দোকান।এর আগে এতো সুন্দর মিস্টি কাজল কখনোই চোখে দেখেনি ।এর আগে মালিবাগ মসজিদের হুজুর ওদের মতো সবাই কে মিস্টি দিয়েছিলো।ওইটাই ওর জীবনের প্রথম মিষ্টি খাওয়া ,কিন্তু ওই মিষ্টী টা ছিলো লাল। আর কাজল যে মিষ্টি গুলো দেখে ওই মিস্টি সাদা।দুপুরের তপ্ত রোদে ওশকু খুশকু চুলে তাকিয়ে আছে ভাবছে ও একটা মিষ্টি ও কিনবে ।মিষ্টির দোকানে যেয়ে ও যখন দাম জানে তখন বরো বরো চোখে দোকানির দিকে তাকিয়ে থাকা ছারা আর কোনো উপায় থাকে না। ৪৮ টাকা দিয়ে কেউ কি মিস্টি খায় ভাবতে ভাবতে কাজল সামনের দিকে আগাচ্ছে।রাতে বারি ফিরে যখন ঘুমাতে যায় কাজল তার মাকে বলে "মা আমারে এটা মিষ্টি কিনা দিবা" ওর মা কোনো উত্তর না দিয়ে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়।কাজল তার ছোট রিদয় কে মিস্টি খাওয়ার ইচ্ছা পুরন করার কোন মিথ্যা সান্তনা দিতে পারে না।প্রতিদিনের মতো খুব ভোরে কাজল ঘুম থেকে উঠে তার কাজে বের হয়ে যায়।১ বছর ধরে নতুন কোনো জামা নেই তার,এর আগে কামাল সাহেবের বাসায় বোয়াল মাছ খেয়েছিলো কি যে মজা এখনো ভুলেনি ও ।কাজল প্রতিদিন দেখে কতো গারিওয়ালা সাহেবেরা তাদের মেয়েকে আম্মু বলে ডাকে ,কতো কিছু কিনে দেয় ।কিন্তু ওকে কেউ আম্মু বলে না ।কাজল ভাবে ও বরো হয়ে মিস্ট কিনে খাবে।সেদিন দারিয়ে ফুল বিক্রি করছিলো ও দেখলো একজন সাহেব গারি থেকে নেমে এক প্যাকেট মিস্টি কিনলো তার পর গারিতে উঠে গেলো ।গারি ব্রিজের নিচেই সিগনালে দারিয়ে আছে।গারির ভেতরের স্যার টা মিস্টির প্যাকেট খুলে গারির গ্লাস নামিয়ে একটা মিস্টি খেলো,কাজলের চোখ তখন সপ্নে বিভোর ।সাদা ওই মিস্ট টা যদি একবার একটু খেতে পারতো।কাজল হঠাত দেখলো মিস্ট টা স্যারের হাত থেকে পিচ ঢালা রাস্তায় পরে গেলো ,কাজলের সপ্ন হয়তো সত্যি হতে চলেছে ।কিন্তু তার সপ্নে বাধা হয়ে দারিয়েছে একটি কুকুর ,কুকুর টি মিস্টির দিকেই আসছে।কাজল কোনো দিকে না তাকিয়ে মিস্টির দিকে জোরে ছুটছে কুকুরের আগে গিয়ে ওই মিস্টি পিচ ঢালা বালুর রাস্তা থেকে তুলে খেতে হবে।কিন্তু ,হঠাত পিছন থেকে আসা বাস থেতলে নিয়ে গেলো কাজলের মাথা ।রক্তের ছরাছরি।মানুষ গুলোর চোখ দিয়ে তখন জল বের হয়নি ,হয়তো কুকুর টি নিরবে চোখের জল ফেলেছিল কাজলের জন্য ।কাজলের শরীর তখন মিস্টির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে।কাজল ফুল নিয়ে আর দারায় নি।আর মিস্টির জন্যে কখনো কাজলের চোখ ছল ছল করবে না।প্রতিদিন হয় তো আমি ভারসিটি জাওয়ার আগে দেখবো না লাল গোলাপ হাতে মেয়েটিকে।

ভাই আপনি তো এলিট সমাজের মানুষ ,প্রেমিকা মেইন্টেন করেন ।বারে যেয়ে মদ খান।ভাই একবার শুধু একজন কাজলের সাথে বিকালের নাস্তা করবেন অথবা দুপুরের খাবার খাবেন ।সপ্তাহে ৬ দিন তো প্রিমাকাকে খাওয়ান একদিন একজন কাজল কে খাওয়া খোদার কসম করে আমি সিফাত বলতেছি ওর মুখের যে হাসি টা দেখবেন আপনার চোখে জল এসে পরবে ।এই হাসিতে কোনো নস্টামি নাই,নাই কোনো লোভ শুধু আছে পেটের খুদা ভালো খাবার দিয়ে মিটানোর শান্তির হাসি।আমি দেখেছি ওই হাসি আর অপেখ্যায় আছি এরকম হাজারো হাসি দেখার জন্যে ।
Powered by Blogger.